বই মেলা নিউজ

অনলাইন বইমেলা বিশ্বে নতুন একটি ধারা সৃষ্টি করেছে : ড. অনুপম সেন

দেশের প্রথম অনলাইন বাংলা বইমেলা শুরু

অনলাইন বইমেলা ডেস্ক
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চট্টগ্রামে দেশের প্রথম অনলাইন বাংলা বইমেলা শুরু হয়েছে।
মহান বিজয়ের মাসে বিশ্বের লেখক-পাঠক-প্রকাশকের মধ্যে একটি মেলবন্ধন ঘটানোর লক্ষ্যে মাসব্যাপী এ অনলাইন বইমেলা উদ্বোধন করেন খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী চট্টগ্রাম একাডেমির চেয়ারম্যান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম নানাক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। অনলাইন বাংলা বইমেলার সূচনাও হলো চট্টগ্রাম থেকে। মহা জ্ঞানের এ বইমেলা দেশের একটি অসাধারণ ঘটনা। এ বইমেলা বিশ্বে নতুন একটি ধারা সৃষ্টি করেছে।”
তিনি এমাজন-এর ব্যবসার উদাহরণ টেনে বলেন, “তারা প্রথম বই বিক্রি দিয়েই অনলাইনে ব্যবসা শুরু করে। এখন সব জিনিসই বিকিকিনি করছে তারা। বিশ্ব আজ প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। এখন অনলাইনে পত্র-পত্রিকা, সাংবাদিকতা, বইপাঠ, জিনিস ক্রয়-বিক্রয় সবকিছু চলছে। তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে অনলাইনে বইমেলার আয়োজন নতুন একটি সংযোজন। সমকাল ধারণ করে উদ্যোক্তারা যে বইমেলার আয়োজন করেছেন তা অসাধারণ। আসলে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বই মানুষকে আনন্দ দেয়, জ্ঞানী করে, বুদ্ধিকে শাণিত করে। জীবনকে সুন্দরভাবে পরিচালিত করে। যে ব্যক্তি সাহিত্যকে জীবনের সাথে একাত্ম করেছে সে অমূল্য আনন্দের আস্বাদ পেয়েছে। নিজের অস্তিত্বকে বিকশিত করতে পেরেছে। জগতকে বোঝার, ঈশ্বরকে জানার সমার্থক হিসেবে বই-ই পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে। ৫০০ বছর পূর্বের বই এখনও আমাদের আনন্দ দেয়, শিক্ষা দেয়। ফেরদৌসী, শেখ সাদীসহ প্রচীনযুগের লেখকদের বই পড়ে এখনও আমরা আনন্দ পাই। ইতিহাস জানতে পারি।” তিনি চট্টগ্রাম একাডেমি প্রসঙ্গে বলেন, “এটি বাংলা ভাষা-ভাষী বাঙালিদের কাছে একটি অসাধারণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাদৃত হবে।”
আজ মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজ-নুরনাহার মিলনায়তনে অনলাইন বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনলাইন বাংলা বইমেলা পরিষদের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক-সাংবাদিক রাশেদ রউফ।
আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমুর সঞ্চালনায় সূচনা বক্তব্য রাখেন বইমেলা পরিষদের মহাসচিব নেছার আহমদ।
বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ-প্রাবন্ধিক প্রফেসর রীতা দত্ত, চট্টগ্রাম একাডেমির মহাপরিচালক শিশুসাহিত্যিক অরুণ শীল।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শিশুসাহিত্যিক বিপুল বড়ুয়া, উৎপলকান্তি বড়ুয়া, আজিজ রাহমান, শামসুদ্দীন শিশির, আবুল কালাম বেলাল, অমিত বড়ুয়া, শাকিল আহমদ, মিজানুর রহমান শামীম, মৃণালিনী চক্রবর্তী, শাহ আল নিপু, কাঞ্চনা চক্রবর্তী, আরিফ রায়হান, আলী প্রয়াস, মো. রেজাউল করিম, ইসমাইল জসীম, গোফরান উদ্দীন টিটু, বাসুদেব খাস্তগীর, সৈয়দা সেলিমা আক্তার, ফারজানা রহমান শিমু, বদরুন নেসা সাজু, সুপ্রতিম বড়ুয়া, মিলন বনিক, এস এম আবদুল আজিজ, এম কামাল উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ মামুন, সালাম সৌরভ, রেজাউল করিম স্বপন, এম. মোখলেসুর রহমান, জসীম উদ্দিন খান, লিটন কুমার চৌধুরী, তসলিম খাঁ, ইমরান প্রমুখ।
প্রফেসর রীতা দত্ত বলেন, “করোনাকালীন বিপর্যয়ের হতাশাকে পরাস্ত করেছে অনলাইন বাংলা বইমেলা। চট্টগ্রাম সব সময় আগুয়ান। তা আরও একবার প্রমাণিত হলো এ বইমেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। তথ্যপ্রযুক্তির এ বিশ্বে অনলাইন নিয়ন্ত্রণ করছে এখন সবকিছু। তাহলে বইমেলা কেন নয়? এ ধারণাকে বাস্তবে রূপ যারা দিয়েছেন তারা একটি অনন্য কাজ করেছেন।”
অনলাইন বইমেলা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজ-নুরনাহার মিলনায়তনে প্রধান সার্ভার কেন্দ্র উন্মুক্ত থাকবে। আগ্রহীরা পরিদর্শন করতে পারবেন।
বইমেলায় ১৬০ লেখক অংশ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেক লেখককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মূল্যায়নধর্মী লেখা প্রকাশিত হয়েছে। বই থেকে আপনার পছন্দের বইটি ২০% কমিশনে কিনতে পারবেন। এ ছাড়া banglaboimela.bdtravellers.com ওয়েবসাইটে ক্লিক করে প্রদত্ত নিয়ম অনুযায়ী যে কেউ বই সংগ্রহ করতে পারবেন।
আগামীকাল বুধবার (২ ডিসেম্বর) অনলাইন বাংলা বইমেলায় আলোচনার বিষয় ‘ই-কমার্স-এ বই বিপণন’। এতে মূল আলোচক থাকবেন কবি ও প্রাবন্ধিক অভীক ওসমান।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *