বিচিত্রা সেন : গল্পে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে একজন দক্ষ শিল্পী

বিচিত্রা সেন সমকালীন সাহিত্যের এক বিশিষ্ট ও নিষ্ঠাবান কর্মী। সাহিত্যের নানা মাধ্যমে তিনি সক্রিয়। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা, কলাম লিখে ইতোমধ্যে একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এতো সব মাধ্যমে বিচরণ হলেও তাঁর প্রধান চর্চিত মাধ্যম ‘কথাসাহিত্য’। ছোটো- বড় সবার জন্য তিনি লিখেন সনিষ্ঠ আন্তরিকতায়। ইতিপূর্বে প্রকাশিত হয়েছে গল্পের তিনটি বই। বইগুলো হলো : অন্যরকম গল্প (প্রকাশক শৈলী প্রকাশন), নীল খাম (প্রকাশক শৈলী প্রকাশন) এবং চোখের আলো (প্রকাশক গ্রন্থকুটির, ঢাকা)। আনন্দ ও গৌরবের বিষয়, বই তিনটি ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কাহিনীর ঘটনাপ্রবাহ এবং শব্দের পর শব্দ গেঁথে তিনি তৈরি করেন অপূর্ব গল্পগুলো। গল্পে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে তিনি একজন দক্ষ শিল্পী। এসব ছবিতে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর মনের সমস্ত আকুলতা ও কল্পনা। গ্রন্থভুক্ত গল্পগুলোতে প্রেমের চিত্রের সঙ্গে সমকালীন সমাজকেও অঙ্কন করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
পাঠকের মনোরঞ্জনই গল্পকার বিচিত্রা সেনের সাহিত্যকৃতির প্রধান অভীষ্ট। মানব-মনের জটিল ও রহস্যময় দিকের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করবার লক্ষ্যেই লেখক নানাবিধ চরিত্র সৃষ্টি করে থাকেন। লেখকেরা সাধারণত এই জটিলতার ব্যাখ্যা দিতে অভ্যস্ত; তাঁরা ঘটনার কার্যকারণ অনুসন্ধানে আগ্রহী। তাতে রচনার পরিধি বাড়ে, লেখকের মননশীলতার স্বাক্ষর রচিত হয়। বিচিত্রা সেন এই দায়িত্বটি পাঠকের জন্য নিরঙ্কুশভাবে সংরক্ষণ করেছেন। ঘটনার নিবিড়-গভীর ময়নাতদন্তে না-গিয়ে স্বল্প পরিসরে ঘটনাবহুল তার আখ্যান তৈরি করতে সক্ষম তিনি।
বিচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৭০ সালে ২২ মার্চ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলার উত্তরভূর্ষি গ্রামে। বাবা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত শহীদ বিভূতি রঞ্জন সেন, মা শ্রীমতী কল্যাণী সেন।
বিচিত্রা সেন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সসহ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এম. এ.তে তাঁর গবেষণাপত্র ছিল “রশীদ করিমের উপন্যাসে নাগরিক মধ্যবিত্তের জীবনচিত্র”। পেশাগত জীবনে বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজ চট্টগ্রামে অধ্যাপনায় নিয়োজিত।
প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় কিশোর বয়সে ‘দৈনিক আজাদী’র আগামীদের আসরে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে এবং বিশ্বের বাংলাভাষার অনলাইন পত্রিকায় নিয়মিত তাঁর গল্প, কবিতা এবং প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়।
ছোটবেলা থেকে লেখালেখি এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে জড়িত। তারই ধারাবাহিতায় বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন এর চট্টগ্রাম কেন্দ্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ। ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত গ্রুপথিয়েটারভিত্তিক নাট্যসম্প্রদায় ‘উচ্চারণ’ এর নিয়মিত অভিনেত্রী ছিলেন। বর্তমানে বিভিন্ন মানবাধিকার ও সমাজসচেতনতাভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন।
গল্পকার বিচিত্রা সেন থাকছেন আমাদের ‘অনলাইন বাংলা বইমেলায়’। থাকছে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বই। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।

Showing all 2 results

Show sidebar