অজয় দাশগুপ্ত : প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয় লেখক, তুখোর ছড়াকার
১.
স্বাধীনতা পতাকায়, স্বাধীনতা রক্তে
কারা আনে স্বাধীনতা, কারা বসে তখতে!
২.
সংস্কৃতি মানে যদি লাকী খান নাচা
দেশ তবে দেশ নয় বানরের খাঁচা!
৩.
যারা করে চাষ, হৃদয়ের ঘাস
ফোটানো গোলাপ গালিচায়
সে বাগান জুড়ে কোথা থেকে উড়ে
উটকো লোকেরা তালি চায়!
এরকম অনেক জনপ্রিয় ছড়ার নির্মাতা অজয় দাশগুপ্ত। সত্তর দশকের ছড়া-অঙ্গন তোলপাড় করা লেখক তিনি। বর্তমানে প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ায় অত্যন্ত সচল ও সক্রিয় লেখক। সমকালীন বিষয়ে কলাম লিখে তিনি পেয়েছেন ব্যাপক পরিচিতি ও খ্যাতি। দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন যাপন করলেও নিরন্তর লেখালেখির জন্য দেশে তাঁর অনুপস্থিতি অনুমান করা যায় না। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন মূলধারার পাঠককে মোহিত করে। সমসাময়িক বিষয়ে তাঁর যৌক্তিক ও মননধর্মী বিশ্লেষণের কারণে তিনি সক্ষম হয়েছেন তাঁর নিজস্ব পাঠক ভুবন তৈরি করতে।
অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার তাৎক্ষণিক শিল্পসম্মত প্রকাশ রীতিমত অভাবনীয় বিষয়। দেশের যে কোন সংকট সমস্যায় তিনি উচ্চকণ্ঠ, অন্যায় অনাচার অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
অজয় দাশগুপ্তের জন্ম চট্টগ্রামে। পড়াশোনা করেছেন মিউনিসিপ্যাল মডেল হাই স্কুল, চটগ্রাম কলেজ, চটগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান পেশা: বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রফেশনাল পরীক্ষক। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে :
তোমার আমার ঠিকানা( ছড়া), কৃষ্ণ সংস্কৃতির উথান পর্বে (প্রবন্ধ), তৃতীয় বাংলার চোখে (কলাম), ছড়ায় গড়ায় ইতিহাস ( ছড়া), দূরের দুরবিনে স্বদেশ( কলাম), শুধু ছড়া পঞ্চাশ ( ছড়া), কলামগুচ্ছ ( কলাম সংকলন), কালো অক্ষরে তোমার রক্তাভ মুখ( কবিতা)। লেখালেখির জন্য তিনি কবিতায় জাতীয় পুরষ্কার ১৯৮৪ সাল (বাংলাদেশ পরিষদ), মুক্তিযোদ্ধা সংসদ পুরস্কার, সিডনি মুক্তমঞ্চ পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার ও সম্মননা লাভ করেন।
অজয় দাশগুপ্ত আমার প্রিয় ছড়াসাহিত্যিক। ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমি আছি তাঁর সঙ্গে। ‘রাজাকার বিরোধী ছড়া’, ‘দাবাইয়া রাখতে পারবা না’, ‘আমরা তোদের বিরুদ্ধে’ প্রভৃতি সংকলন সম্পাদনার সময় আমি পেয়েছি তাঁর আনুকূল্য। ১৯৮৯ সালে প্রথম জাতীয় ছড়া উৎসবের যখন উদ্যোগ গ্রহণ করি, তখন অন্যদের চেয়ে তিনিই আমাকে বেশি উৎসাহিত করেন।