আমীরুল ইসলাম : আধুনিক শিশুসাহিত্যের উজ্জ্বল রূপকার
আমীরুল ইসলাম। সমকালীন শিশুসাহিত্যে অত্যন্ত সচল ও উল্লেখযোগ্য নাম। গদ্য ও পদ্য – উভয় মাধ্যমে তিনি শুধু সক্রিয় নন, স্বতঃস্ফূর্তও। কলাকৌশলের নতুনত্ব, ভাষার চমকপ্রদ ভঙ্গিমা, অদ্ভুত শব্দযোজনা ও বিষয়-বৈচিত্র্যের কারণে তাঁর রচনাগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়। তাঁর ছড়ায় যেমন অভিনবত্বের সাক্ষাৎ মেলে, তেমনি পাওয়া যায় গতিশীল ও রঙিন ছবি। তাঁর লেখায় অকারণ বিশেষণের ছড়াছড়ি নেই, বিষয়-বর্ণনায় বাড়াবাড়ি নেই, ছন্দ-মিলের জোরজুরি নেই, ভাববিলাসের উচ্ছ্বাসও নেই; যা আছে-অকৃত্রিম ও অনন্য। তাঁর লেখায় ফুটে ওঠে লেখকের উচ্চাশা, আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন ও আত্মসচেতন মনের আঙিনা। দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষত্ব, চতুর্মুখী চিন্তাক্ষেত্র এবং ছন্দের তির্যক গতি তাঁর লেখার মূল ভিত্তি। তিনি সবসময় জীবনের আলোকিত দিকের কথা তুলে ধরেন, বলেন স্বপ্নের কথা – সম্ভাবনার কথা। তাঁর রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য স্পষ্টতা, সরলতা ও সাবলীলতা। তিনি বক্তব্য প্রকাশে যেমন অকুণ্ঠ, তেমনি পঙ্ক্তি নির্মাণে উজ্জ্বল রৌদ্রদীপ্ত। তাঁর ছড়া-কবিতার অবয়বে আছে এক ধরনের বিশেষ আমেজ ও আবহ সৃষ্টিকারী শক্তি। আঙ্গিক ও পঙ্ক্তি বিন্যাসে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, ছন্দ-মাত্রা-পর্বে ভাঙচুর করেছেন, বাক্যবিন্যাসের বৈচিত্র্যে ও বৈভবে উপহার দিয়েছেন চিত্রল-সঙ্গীত। শব্দময়তার কারণে পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে অপূর্ব ধ্বনিময়তার আবেশ সঞ্চারিত হয়েছে। বর্ণিল, স্বপ্নময়, অভিনব ও আধুনিক ছড়ার নির্মাতা হিসেবে তিনি পেয়েছেন জনপ্রিয়তা, পেয়েছেন পাঠকের ভালোবাসা ও স্বীকৃতি। তাঁকে বলা হয় আধুনিক শিশুসাহিত্যের উজ্জ্বল রূপকার।
৩০০টিরও অধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। তার মধ্যে ছড়া রচনাবলি, কিশোর গল্পসমগ্র, আমীরুলের কি ছড়া হয়? তুমি আমাদের জাতির পিতা, ছেলেবেলার ছেলেখেলা উল্লেখযোগ্য। লেখালেখিতে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা তিনি অর্জন করেন।

Showing all 4 results

Show sidebar