সুলতানা নুরজাহান রোজী : সুন্দরের কারিগর
সুলতানা নুরজাহান রোজী। নানা দিকে তাঁর পদচারণা। নারী শিল্প উদ্যোক্তা হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন বহু বছর ধরে, নিরলসভাবে পরিশ্রম ও সততার সঙ্গে। তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দেশে ও বিদেশে অনেক পুরস্কারে ভূষিতও হয়েছেন তিনি। ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি ও স্বীকৃতি। সাংগঠনিক কর্মকা-ে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন বলে অনেক জায়গায় তাঁর নেতৃত্ব প্রত্যক্ষ করা যায়। চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের পরিচালক তিনি। সমাজসেবাতেও তিনি সমধিক সক্রিয় ও নিবেদিত। ইন্টারন্যাশনাল ও ন্যাশনাল অনেক সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে সচেষ্ট থাকেন সবসময়। বলা যায়, নীরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন।
সাহিত্যের জমিনেও তিনি চাষাবাদ করছেন সনিষ্ঠ আন্তরিকতায়। তাঁর প্রতিটি কাজে নতুনত্ব আছে, চমক আছে। তিনি তাঁর কাজ দিয়ে আমাদের সামনে আলোঝলমলে ‘শিল্পী সুলতানা নুরজাহান রোজী’কে উপস্থাপন করেন প্রতিনিয়ত। আমরা সুন্দরের চর্চা করি, সুন্দরকে উপভোগ করি, প্রকৃতির নিরাভরণ সৌন্দর্যের মতো তাঁর সৌন্দর্যবোধকেও নিরীক্ষণ করি। তিনি জানেন, সুন্দরের চর্চা আমাদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর ও নান্দনিক তার সবকিছুরই স্রষ্টা এই শিল্পীরা। এমনকি প্রকৃতির যে সৌন্দর্য তাকেও কখনো কবিতায়, কখনো গল্প-উপন্যাসে, কখনো গানে, কখনো পোশাকে এবং কখনো তুলির আঁচড়ে মানুষের সামনে তুলে ধরেন এই শিল্পীরা। সুলতানা নুরজাহান রোজী তেমন এক সুন্দরের কারিগর। লেখার মধ্যে থাকে সমাজ বদলানোর আহ্বান। সত্য ও সুন্দর প্রকাশই তাঁর ব্রত।
সুলতানা নুরজাহান রোজীর দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো : পথের পরে ও সমুদ্রের নোনা জল। আরো ৩টি বই প্রকাশিত হওয়ার পথে। সেগুলো হচ্ছে : অসুস্থ পৃথিবী, সুরঞ্জনা, ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ আসছে পৃথিবীতে।
যদি মনের ভাব ও অনুভূতিকে আমরা কবিতার আত্মা বলি, তাহলে সেগুলোকে প্রকাশের জন্য যে সকল শব্দ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে বলা হয়ে থাকে কবিতার শরীর। কাব্য-সমালোচকরা বলেন, শব্দের নিপুণ বিন্যাসে ও আভরণে কবিতা বিচিত্র বৈভবে চিত্তাকর্ষক হয়ে ওঠে। তাই কবিতা পাঠে পাঠকের মনে আনন্দানুভূতির শিহরণ জাগে। সুলতানা নুরজাহান রোজীর কবিতায় আমরা দেখি তাঁর অব্যক্ত আবেগ ও সুন্দরের প্রকাশ। আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তিনি তাঁর কবিতাকে চিত্রময় করার চেষ্টা করেন। পাঠকের মনের ভেতর সৌন্দর্যময় বিচিত্র ভুবন নির্মাণ করার প্রয়াস লক্ষ্যণীয়।
সুলতানা নুরজাহান রোজীর জন্ম হাটহাজারীর ফতেপুর গ্রামে। বাবা আয়কর আইনজীবী ফয়েজউল্লাহ মিয়া, মা নুর নাহার। তাঁর বাবা ও মায়ের নামে চট্টগ্রাম একাডেমির ‘ফয়েজ- নুর নাহার মিলনায়তন’। তিনি চট্টগ্রাম একাডেমির আজীবন সদস্য।
কবি সুলতানা নুরজাহান রোজী থাকছেন আমাদের ‘অনলাইন বাংলা বইমেলায়’। থাকছে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বই। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করি।