হাসনাত আমজাদ মূলত একজন ছড়াকবি ও শিশুসাহিত্যিক। চার দশকেরও অধিক সময় থেকে লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি। বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার লেখা ছড়া, কিশোর কবিতা, সমকালীন ছড়া,গল্প প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে। বড়দের জন্যও লেখেন তিনি, তবে তা খুব অল্প। লেখালেখির শুরু সত্তর দশকের শেষ দিক থেকে। যদিও স্কুলজীবনে স্কুল ম্যাগাজিনে তার প্রথম গল্প ছাপা হয়েছিলো কিন্তু তা সেইখানেই থেমে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে আবার যখন লেখালেখির সাথে যুক্ত হন সে সময় রাজশাহী থেকে প্রকাশিত হতো উত্তর জনপদের একমাত্র সরকারী জাতীয় পত্রিকা দৈনিক বার্তা। সেখানে প্রতি শুক্রবার বের হত ছোটদের পাতা কিশোর কুঁড়ির মেলা। কিশোর কুঁড়ির মেলা পাতায় ছাপা হয় হাসনাত আমজাদের প্রথম ছড়া। এর পর নিয়মিত লিখা শুরু করেন কিশোর বাংলা, শিশু, ধান শালিকের দেশ, সাত ভাই চ¤পা, খেলাঘর, কচি কাঁচার আসর, মুকুলের মহফিলসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও জাতীয় দৈনিকের শিশুদের পাতায়। মাঝখানে লেখালেখিতে কিছু ছেদ পড়েছিলো তার। বেশ কয়েক বছর বিরতির পর আবার ফিরে আসেন তিনি। লেখালেখির শুরু অনেক আগে হলেও হাসনাত আমজাদের বই প্রকাশিত হয় অনেক পরে। ২০১৩ এর বইমেলায় তার প্রথম ছড়ার বই মাঠের ছবি ঘাটের ছবি” প্রকাশ পায়। ২০১৪ এর বইমেলায় প্রকাশ পায় সমকালীন ছড়ার বই ”দেখছি এমন কেন”। ২০১৫ তে প্রকাশ পায় কিশোর কবিতার বই ”যাই হারিয়ে ছেলেবেলায়”এবং ২০১৬ এর বইমেলাতে প্রকাশ পায় একসাথে দুটি বই। কিশোর কবিতার বই ”স্মৃতির ডানায় কিশোরবেলায” এবং ছড়ার বই ”ভূত এসেছে বইমেলাতে”। ২০১৭ তে সমকালীন ছড়াগ্রন্থ তেলাপোকা হবে তোলাপাখি, ২০১৮ তে কিশোরকবিতা গ্রন্থ যখন আমার একলা দুপুর এবং ২০১৯ এ গল্পগ্রন্থ একটা লিচু ও অন্যান্য গল্প। ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় নির্বাচিত কিশোর কবিতা। এ পর্যন্ত হাসনাত আমজাদের মোট প্রকাশিত বই ৯টি। শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রদত্ত অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি পুরস্কার ২০১৩, চট্টগ্রাম একাডেমি প্রবর্তিত ”অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৩”, নিখিল ভারত শিশুসাহিত্য সংসদ প্রদত্ত চর্যাপদ সম্মাননা ২০১৭ এবং সোনারপুর কাব্যমঞ্চ, কোলকাতা কর্তৃক শিউলী স্মারক সম্মাননা ২০১৭ সহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেছেন তিনি।
হাসনাত আমজাদ পদ্মাপাড়ের ছেলে। জন্ম বরেন্দ্রভূমি রাজশাহীতে। জন্ম তারিখ ১২ মার্চ, ১৯৬০। বাবা মোঃ লুৎফুর রহমান একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা। মাতা সুফিয়া বেগম।ব্যক্তিজীবনে হাসনাত আমজাদ বিবাহিত। স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমীন। তাদের দুই সন্তান। এক ছেলে এক মেয়ে। ফাহিম ফয়সাল হাসান আর নুজহাত নাদিয়া শ্রাবনী। দুই সন্তানই ঢাকায় একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। কর্মজীবনে হাসনাত আমজাদ বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় মাইক্রোফিন্যান্স প্রোগ্রামে কাজ করেছেন। সবশেষে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন।
No products were found matching your selection.