রওশন আরা বিউটি। জন্ম ২৯ নভেম্বর চট্টগামে। খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর সঙ্গীতের প্রতি ছিল ভীষন আকর্ষণ। চট্টগ্রাম শাশ্বত ললিত কলা একাডেমির উচ্চাজ্ঞসঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী ছিলেন রওশন আরা। বাবার উৎসাহে শিশুবেলা থেকেই গান গাইতে শুরু করেন। জড়িত ছিলেন খেলাঘর আসরের সাথে। খেলাঘরের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বেতারে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেন। যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছিলেন তখন চট্টগ্রাম কচিকাঁচার আসরের যৌথ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতে ৫৩জন প্রতিযোগীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। চট্টগ্রাম শাশ্বত ললিত কলা একাডেমীর পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বেতারে দুবার সঙ্গীত পরিবেশন করেন এবং উপস্থাপনাও করেন। উপস্থাপনায় খুব পারদর্শী ছিলেন বলে বিভিন্ন দিক থেকে নিয়মিত উপস্থাপনার ডাক পড়তো। রওশন আরা শাশ্বত ললিত কলা একাডেমি থেকে দুটো নাটকে অভিনয় করেছেন। যখন কলেজে পড়ছিলেন তখন আবদুল্লাহ্ আল-মামুন এর ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’ ও ‘এখন দুঃসময়’ নাটকে নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। ‘আয়নায় বন্ধুর মুখ’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল চট্টগ্রাম ওয়াজিউল্লাহ ইনিস্টটিউটে এবং ‘এখন দুঃসময়’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে।

রওশন আরা বিউটি একজন প্রাবন্ধিক ও পরিশ্রমী গবেষকের নাম। সঙ্গীত ও সঙ্গীতশিল্পীদের কর্মই তাঁর গবেষনার বিষয়। বেশ ক’বছর ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক ‘আজাদী’ তে নিয়মিত লিখে আসছেন তিনি। তাঁর লেখাগুলো পাঠক সমাদৃত হয়েছে ব্যাপকভাবে। আমাদের দেশে সঙ্গীত শিল্পীদের সাক্ষাৎকারমূলক ফিচার বা লেখা প্রচুর ছাপা হলেও তাঁদের কর্ম নিয়ে গবেষনাধর্মী লেখা খুব কমই চোখে পড়েছে। রওশন আরা বিউটি শুধু কন্ঠশিল্পী নন, তাঁর গবেষনার মধ্যে রয়েছে গীতিকার ও সুরকারও। কারণ তিনি মনে করেন, একটি গান পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে গীতিকার, সুরকার ও কন্ঠশিল্পীর যৌথ প্রয়াসে।

‘সুরের আকাশে শুকতারা’ হিসেবে খ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের জীবন ও কর্ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন সঙ্গীত গবেষক ও প্রাবন্ধিক রওশন আরা বিউটি। ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘সুরের আকাশে শুকতারা’ গ্রন্থের প্রথম খন্ড। সেখানে মোট ১১ জন শিল্পীর জীবন-বৃত্তান্ত অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। ২০১৪ সালে বেরুলো দ্বিতীয় খন্ড। সেখানে সন্নিবেশিত হলেন ১২ জন শিল্পী। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হলো তৃতীয় খন্ড। সেখানে অন্তর্ভুক্ত হলেন ১৮ জন শিল্পী। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হলো চতুর্থ খন্ড। সেখানে অন্তর্ভুক্ত হলেন ১৭ জন শিল্পী। ২০১৯ সালে প্রকাশিত হলো পঞ্চম খন্ড। সেখানে অন্তর্ভুক্ত হলেন ১০ জন শিল্পী। গ্রন্থভুক্ত হওয়ার আগে লেখাগুলো দৈনিক আজাদীতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। প্রতিটি খ- সঙ্গীতপ্রেমীসহ সুধী পাঠকদের প্রচুর প্রশংসা লাভ করে।

Show sidebar

No products were found matching your selection.