মাহবুবা চৌধুরী : যিনি নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টির উন্মাদনায় বিভোর

মাহবুবা চৌধুরী। আমাদের অগ্রজ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম ব্যাচের ছাত্রী। লেখালেখিতে যেমন নিবেদিত, তেমনি সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় খুবই সক্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের যে কোনো সৃজনকর্মে তাঁর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা উল্লেখ করার মতো। অতি সম্প্রতি কালধারা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ : ‘এক মুঠো চাঁদ’। জীবনের নানা দিক বিচিত্ররূপে উপস্থাপিত করেছেন কবি তাঁর কবিতায়, তাঁর গ্রন্থে। যেখানে শব্দরা কথা বলে ওঠে। নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টির উন্মাদনায় বিভোর তিনি। যেন নতুন চিন্তার ফল্গুধারায় সিক্ত হয়েছে কবিতার একেকটি পংক্তি। শব্দে চিত্রকল্পে প্রাণ পায় নতুন অনুভূতি।
যেমন :

তোমার ঠোঁটে জলন্ত সিগারেট
হয়ে পুড়ে নিঃশেষ হবো, জেনেও
বারবার পোড়াও এ কোন ছলে
অথচ তুমি জাননা
বুকের গভীরে একটা ছোট্ট বোতামে
জড়িয়ে রাখা অনেক ভালোলাগা
তোমার শুভ্র শার্টে জুড়ে দিতে দিতে
আমি কতবার নিজেকে পুড়িয়েছি
প্রণয়ের আগুনে।
তুমি আমাকে সমুদ্রের কাছাকাছি ডাক
অথচ তুমি জান না আমি এর
স্তনন শুনতে পাই তোমার গভীর
অভিষঙ্গে, যেখানে একটু একটু করে
খুঁয়ে পড়ে তরল বালুচর
পাড় ভাঙে অসীম সুখে।
[সুখের এক নাম তরল বালুচর /মাহবুবা চৌধুরী]

অথবা

চাইনি বলেই কি পাইনি,
ইচ্ছেগুলো দন্ডিত হলো
সোনালি কাফনে,
কেন?
কাঁচের দেয়ালে বসেছে মুখ আর মুখোশ
পাশাপাশি,
শুদ্ধে-অশুদ্ধে হবে যাচাই বাছাই
কি লাভ?
কার লাভ?
একহারা দিনগুলো পাওয়া না-পাওয়া অলিগলি ঘুরে ঘুরে বড় ক্লান্ত,
অপেক্ষার প্রতুল সময় ধীরে ধীরে বামন হয়েছে,
ইচ্ছেরাও গুটিয়ে নিয়েছে শামুক শরীর।
আর কেন, জড়ানো ঊর্ণনাভ তন্তুতে?
[কোথায় জড়িয়ে আছি/ মাহবুবা চৌধুরী]

নিজের অনুভূতিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে। আত্মক্ষয়ের দিকে না গিয়ে আত্মচিন্তা নিয়ে সুন্দরের আরাধনায় আত্মমগ্ন তিনি। তাঁর কবিতায় তিমিরবিনাশের প্রতি তাঁর টান ফুটে ওঠে।

মাহবুবা চৌধুরীর জন্ম চাঁদপুরে। তবে শৈশব কৈশোর যৌবনের স্বর্ণালি দিনগুলো কাটাচ্ছেন চট্টগ্রামে।

Show sidebar

No products were found matching your selection.